লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য
একটি অরাজনৈতিক ও মানবকল্যাণে নিবেদিত সেবামূলক প্রতিষ্ঠান হিসেবে শিহাব আহমেদ ফাউন্ডেশন অসহায়-দুঃস্থ ও গরিব-দুঃখী মানুষের পাশে দাড়াঁনো থেকে শুরু করে আর্তমানবতার সেবাসহ উৎকৃষ্ট সকল ক্ষেত্রে সংস্কার সাধনের মাধ্যমে সুন্দর একটি সমাজ গঠন, দারিদ্রতা নিরসনে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ, বেকারত্ব দূরীকরণে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা,সুষ্ঠু সমাজ গঠনের মূলভিত্তি মূল্যবোধ ও নীতিচেতনার উন্মেষ ঘটানো এবং সমাজের সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের জীবনমান উন্নত করার প্রয়াসে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ ও তা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত।এই প্রতিষ্ঠানটি একজন মানুষের সুন্দরভাবে বেঁচে থাকার জন্য পাঁচটি মৌলিক অধিকারসহ অন্যান্য সকল গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো বাস্তবায়নের নিমিত্তে সেরাটা দিয়ে কাজ করা এবং সুন্দর একটি সমাজ ও দেশ গড়ার প্রয়াসে যে স্বপ্ন ও সাহসিকতার পরিচয় দিচ্ছে তা মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে আশ্চর্যান্বিত এক অভিব্যক্তি নিয়ে শুনতে বাধ্য হয় সকলেই। শুধু দুনিয়া নয়, আমাদের জীবনের প্রধান লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য আখিরাতের জীবনকে প্রাধান্য দিয়েই বাস্তবায়িত হচ্ছে সকল কার্যক্রম।
দারিদ্রতা দূরীকরণে গৃহীত পদক্ষেপ
স্বচ্ছ ও সুন্দর সমাজ গঠনের প্রধান অন্তরায় দারিদ্রতা নিরসনে বিভিন্ন সময়ে, বিভিন্ন প্রেক্ষাপটে গ্রহণ করা হচ্ছে নানান পদক্ষেপ। দারিদ্র্য জনগোষ্ঠীর মধ্যে পরিচালনা করা হচ্ছে নানান ধরনের জনহিতকর কার্যক্রম এবং প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে গ্রহণ করা হচ্ছে দাতব্য সেবা ব্যবস্থার।রাস্তার পাশে যাদের রাত্রি যাপিত হয়,অসহায়ত্ব যেনে জীবনের চরম পর্যায়ে গ্রাস করে বসেছে, দুনিয়াতে আপন বলতে কেউ নেই তাদের, সেই অবহেলিত অনাদরে পড়ে থাকা মানুষদের একটুখানি আদর দিয়ে, মাথা গোঁজার ঠাঁই করে দিতে, তাদের মুখে হাসি ফুটিয়ে তুলতে এবং অসহায়, এতিম, অনাথ, বৃদ্ধ, বেকার, শারীরিকভাবে অক্ষম ও প্রতিবন্ধীদের জন্য পুনর্বাসন মূলক প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়নের সর্বোচ্চ চেষ্টা অব্যাহত রেখে চলেছে এই প্রতিষ্ঠানটি।
শিক্ষার উন্নয়নে অগ্রণী ভূমিকা পালন
শিক্ষাকে বলা হচ্ছে জাতির মেরুদন্ড যেটি কিনা অন্ধকারে আলোর দীপশিখার মতো জ্বল জ্বল করে জ্বলে উঠে,শিক্ষা নামক এই আলোক শিখা দ্বারাই কারো অন্ধকার একটি জীবনকে আলোকিত করা সম্ভব হয়ে উঠে। তাই সমাজের উন্নয়ন ঘটাতে হলে সর্বপ্রথম প্রায়োরিটি দিতে হবে যে সেক্টরটি সেটি হলো শিক্ষাব্যবস্থা।এই শিক্ষাব্যবস্থার সঠিক ও সুষ্ঠু প্রসার ঘটানোর লক্ষ্যে বিভিন্ন যুগান্তকারী পদক্ষেপ হাতে নিয়েছে শিহাব আহমেদ ফাউন্ডেশন। যেমন-কিন্ডার গার্টেন,স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, মকতব, মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করার সহিত সাহিত্য, কলা ও বিজ্ঞান শিক্ষার কার্যক্রম চালু রাখা। শুধুমাত্র ভালো শিক্ষা ব্যবস্থা নয় সেরা মানের একটি শিক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর শিক্ষা ব্যবস্থা হতে বিভিন্ন ভালো দিকগুলো যোগ করা এবং অন্যান্য সকল যুগোপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণ। গরিব, অনাথ ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের মানসম্মত শিক্ষা লাভের সুযোগ সৃষ্টি এবং তাদের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের আলোক রেখাটি একেঁ দিতে তাদের জন্য শিক্ষাবৃত্তির ব্যবস্থা করা। ”দারিদ্র্য বাধা নয়, শিক্ষা সবার অধিকার” শিরোনামে চালু করা হয় শিহাব আহমেদ শিক্ষাবৃত্তি।
ধর্মীয় চেতনাবোধ ও ইসলামি শিক্ষা :
সাধারণ সকল শিক্ষা প্রকল্পের পাশাপাশি মসজিদ ও মাদ্রাসা নির্মাণ এবং ইসলামী শিক্ষায় অর্থায়নের মাধ্যমে ধর্মীয় শিক্ষার উপর গুরুত্বারোপ করে এর প্রসারে কাজ করা।আখিরাতের জীবনকে সর্বোচ্চ প্রাধান্য প্রদানের লক্ষ্যে ইসলামকে অনুসরণ করে বাস্তবায়ন করা হয় সকল পদক্ষেপ। ইসলামি শিক্ষার উন্নয়ন, প্রচার এবং প্রতিষ্ঠা করতে মসজিদ, মাদ্রাসা ও এতিমখানা স্থাপনের পাশাপাশি গরিব আলেম-ওলামাদের মধ্যে বিনামূল্যে বই ও কোরআন সরবরাহ করা।
মানবতার সেবা করা কোনো দয়া নয়, বরং এটি আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। মানুষের কষ্টের সময় পাশে দাঁড়ানোই আমাদের প্রকৃত শক্তি। – শিহাব আহমেদ
বিভিন্ন সহায়তা মূলক প্রকল্প গ্রহণ
সমাজের নিম্ন-মধ্যবিত্ত মানুষদের প্রতি সহনশীলতা প্রদর্শনপূর্বক এবং তাদের মুখ ফুটে কিছু বলতে না পারার বিষয়টি মাথায় নিয়ে তাদের জন্য বিভিন্ন সময় সহায়তা মূলক কার্যক্রম পরিচালনা, সমাজের মধ্যবিত্ত ও দারিদ্র্য মানুষদের মধ্যে খাদ্য বিতরণ, বিশেষ করে গরু,ছাগল ও ভেড়ার মাংস সরবরাহের মাধ্যমে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। কনকনে ঠান্ডা ও শীতের হাত থেকে রক্ষা করা এবং সুস্থতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বস্ত্রহীন ও অসহায় মানুষদের জন্য শীতের কাপড়ের যথাযথ ব্যবস্থা করা।আকস্মিক কোনো দুর্ঘটনা বা বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ, স্বাস্থ্যসেবা ও অন্যান্য সেবা পৌঁছে দেওয়া ছাড়াও বিভিন্ন সহায়তা মূলক কার্যক্রম পরিচালনা করা।
স্বাস্থ্যসেবা ও বিশুদ্ধ পানি ব্যবস্থা
পাঁচটি মৌলিক অধিকারের মধ্যে অন্যতম একটি অধিকার হলো সুচিকিৎসার অধিকার। সুতরাং, এই বিশেষ অধিকারটি বাস্তবায়নের নিমিত্তে সমাজের অবহেলিত ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য উন্নত চিকিৎসা সুবিধা ও স্বাস্থ্যসেবার ব্যবস্থা করা। শিশুদের স্বাস্থ্য উন্নয়ন ও পুষ্টি চাহিদা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করা এবং গর্ভবতী মা ও শিশুর সঠিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা। সুসাস্থ্য রক্ষা করার অন্যতম নিয়ামক বিশুদ্ধ পানি।বলা পানির অপর নাম নাম জীবন নয় বরং পানির অপর নাম মরণও হতে পারে ! তবে বিশুদ্ধ পানির অপর নামই জীবন।তাই,পানিবাহিত সকল মারাত্মক রোগের হাত থেকে বাঁচাতে এবং বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে গ্রামীণ ও প্রত্যন্ত এলাকার মানুষের জন্য পয়ঃনিষ্কাশন ও নলকূপ স্থাপনের মাধ্যমে বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা করা।
পরিবেশ সুরক্ষায় গৃহীত পদক্ষেপ
লক্ষনীয় একটি বিষয় হলো আমাদের সবুজে ঘেরা অপরুপ এই শ্যামল বাংলা ক্রমশ তার সৌন্দর্য হারিয়ে রুক্ষ একটি ভাবমূর্তি ধারণ করতে চলেছে। কিন্তু আমাদের চিরচেনা এই সবুজ বাংলাকে চিরকাল এমনই সবুজ, সুন্দর রূপে পেতে এবং বাংলার প্রকৃতির স্নিগ্ধ এই বাতাসে বুক ভরে শ্বাস নিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করছে এই সংগঠনটি। “ক্লিন,গ্রিন, মানবিক বাংলাদেশ “ গড়ার লক্ষ্যে পরিবেশ সুরক্ষা, সামাজিক দায়বদ্ধতা এবং মানবিক মূল্যবোধ বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি ও উদ্যোগ গ্রহণ করা। যা আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য একটি সুন্দর, সবুজ ও মানবিক দেশ হিসেবে বাংলাদেশেকে প্রতিষ্ঠিত করে তুলবে।
মূল্যবোধ ও নীতিচেতনার প্রসার
একটি আদর্শ সমাজ গঠনের প্রেক্ষিতে মূল যে বিষয়-নীতি, নৈতিকতা ও মূল্যবোধের উপর জোর প্রদান করে এই প্রতিষ্ঠানটি। সুষ্ঠু সমাজ গঠনের জন্য একবাক্যে বলা শব্দটি হলো মূল্যবোধ ও নীতি নৈতিকতা,যার সঠিক ব্যবহার মানুষকে ভিতর থেকে একজন ভালো মানুষ হিসেবে গড়ে তোলে এবং এর ফলে সমাজের গভীরে প্রোথিত কোনো ভালো কাজও সকলের প্রচেষ্টায় উন্মেষ ঘটানো সম্ভব অনায়াসেই। শিহাব আহমেদ ফাউন্ডেশন সমাজের এই অতীব জরুরি ও গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তিটিকে মজবুত করে তুলতে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়নে তৎপর ভূমিকা পালন করে আসছে। সামাজিক মূল্যবোধ ও নৈতিকতা অর্জন এবং মুক্তিবুদ্ধির চেতনার বিকাশ ও লালনের জন্য বিশেষ সকল উদ্যোগ গ্রহণ করা।
তরুণ প্রজন্মের উন্নয়ন ও সৃজনশীলতা
তরুণ প্রজন্মকে নেতিবাচক বিভিন্ন দিক, খারাপ কোনো অভ্যাস বা বিভিন্ন ধরনের আসক্তি থেকে বাঁচাতে নানান ধরনের কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা। সংস্কৃতি ও খেলাধুলার প্রচার ও প্রসারের মাধ্যমে তরুণ প্রজন্মকে সঠিক দিকনির্দেশনা প্রদান করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করা এবং তাদের শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কাজ করা। এছাড়াও তরুণ ও যুবসমাজের করা কোনো ভালো কাজকে উৎসাহ যোগাতে , সাহস দিতে এবং তাদের মধ্যে উদ্দীপনা সৃষ্টি করতে এই প্রতিষ্ঠানটি তাদের সকল গুরুত্বপূর্ণ অবদান ও অর্জনের জন্য সম্মাননা প্রদান করে।
উপসংহার
এই সকল উদ্দেশ্যাবলি সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়নের মাধ্যমে একটি সুন্দর, সমৃদ্ধ ও সংস্কৃতিমনা সমাজ গড়ে তোলা সম্ভব। নৈতিকতা ও মূল্যবোধের পাশাপাশি সৃজনশীলতাও বজায় থাকবে সকল ক্ষেত্রে। শিহাব আহমেদ ফাউন্ডেশন লক্ষ্য পানে ক্ষিপ্র গতিতে এগিয়ে যাক বহুদূর !